পাহাড়ে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বানার্জীর কারনটা কি ?


গত তিনটি বৈঠকে ধীরে ধীরে পাহাড়কে স্বাভাবিক করার রূপরেখা তৈরি প্রশ্ন হচ্ছে, এ দিন মমতা কল্পতরু কেন? অনেকেই বলছেন, দীর্ঘদিন বন্‌ধ চলার ফলে পাহাড়ে যাবতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ধাক্কা লাগে পাহাড়ের অর্থনীতিতে। তাকে চাঙ্গা করতে এবং পাহাড়বাসীর মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে এই দাবিগুলি প্রথম থেকেই করে আসছিলেন বিনয় তামাঙ্গরা। এ বারের বৈঠকে সেই দাবিদাওয়ার বেশিরভাগকে ছাড়পত্র দিয়ে সেই আস্থা ফেরানোর পথেই হাঁটতে চাইলেন মমতা।করেছে রাজ্য সরকার এবং পাহাড়ের দলগুলি। সে জন্য বিনয় তামাঙ্গদের তরফে বেশ কিছু দাবিদাওয়া করা হয়েছিল প্রথম বৈঠক থেকেই। এ দিন বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, সেই সব দাবির বেশির ভাগই মেনে নেওয়া হয়েছে। যেমন, পাহাড়ে আন্দোলনের সময়ে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের এককালীন অনুদান তো বটেই, পরিবারের এক জনকে চাকরি দেবে জিটিএ।

যে সব সরকারি কর্মী বন্‌ধের সময়ে কাজ করেছেন, তাঁদের জন্য থাকছে ছুটির ব্যবস্থা। আবার শিক্ষকদের বাড়তি ক্লাস করে সিলেবাস শেষ করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়ে যাব। উন্নয়নের সঙ্গে কোনও আপস হবে না।’’জুনের ৮ তারিখ দার্জিলিঙে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময়ে শুরু হয় মোর্চার বিক্ষোভ। তার পরে ১০৪ দিনের টানা বন্‌ধে বিপর্যস্ত হয় গোটা পাহাড়। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে সেই পাহাড়ে আবার যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন শিলিগুড়ির কাছে পিনটেল ভিলেজে চতুর্থ সর্বদল বৈঠকের পরে তিনি জানান, জিটিএ-র পক্ষে তাঁকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে এখনও বিমল গুরুঙ্গের প্রভাব রয়েছে। সদ্য সোমবারই তাঁকে সামান্য হলেও স্বস্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরে এ দিন অডিও-বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি শীঘ্রই দিল্লি যাবেন। নিজেকে ‘অধ্যক্ষ’ বলেও উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে তাঁর হয়ে সমানে মুখ খুলছেন বিজেপি নেতারা। এ দিন মুখ খুলেছেন মুকুল রায়ও। এই অবস্থায় মোর্চার নতুন প্রধান তথা জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গকে ভরসা জোগাতে তাঁদের দাবিগুলি মেনে নেওয়া জরুরি ছিল। সেই কাজটাই কৌশলে এ দিন সারলেন মমতা।

অনেকে বলছেন, পিনটেল ভিলেজ কিন্তু বহু স্মৃতির ধারক-বাহক। এখানেই এক সময়ে জিটিএ চুক্তি হয়েছিল রাজ্য সরকার ও মোর্চার মধ্যে। দরাজ হাতে গুরুঙ্গকে উন্নয়নের বরাদ্দ দিয়েছিলেন মমতা। তার পরে গুরুঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কের দীর্ঘ উত্থানপতন চলে সরকারের। তার পর সাম্প্রতিক বন্‌ধ-আন্দোলন পেরিয়ে আবার সেই পিনটেল ভিলেজ সাক্ষী থাকল আর এক বৈঠকের, আর এক দরাজ ঘোষণার। তবে সেখানে অন্য প্রান্তে আছেন বিনয় তামাঙ্গ।

গুরুঙ্গের ছায়া অবশ্য এখনও রয়েছে পাহাড়ে। সদ্য সোমবার তিনি কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে। যদিও তা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তোলেন বিনয়। তাঁর কথায়, যে হরিশ সালভে মামলা লড়ছেন গুরুঙ্গের হয়ে, তিনি দেশের সব থেকে দামি উকিল। তাঁর দাবি, ‘‘শুনেছি ওই মামলায় এখন অবধি ২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা গুরুঙ্গ পেলেন কোথায়?’’

Comments

Popular posts from this blog

মমতার রাজে শিক্ষকদের কি অবস্তা দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির নাম জানে না এখুনি দেখুন এই ভিডিও।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মহিলাদের এক বড় উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী..

যদি আমি ভারতে থাকতাম, তাহলে নোবেল পুরস্কার পেতাম না! বললেন নোবেল বিজয়ী অভিজিৎ ব্যানার্জী